কৈবর্ত অর্থ জেলে ,ধীবর বা মৎস্যজীবি সম্প্রদায় । এই সম্প্রদায়ের এক স্বর্ণ সন্তানের নাম দিবেবাক। স্বীয় বিদ্যা-বুদ্ধি,কর্মদক্ষতা এবং মেধার বলে তিনি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী পাল রাজবংশের রাজা দ্বিতীয় মহীপালের সেনাপতি হয়েছিলেন। পরে দ্বিতীয় মহীপালের (১০৭০-১০৭১খ্রিঃ) কাছ থেকে রাজ্য কেড়ে নিয়ে তিনি বরেন্দ্র ভূমির ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। আর রাজ্যের রাজধানী করেন নীলফামারীর ডোমারে। কিন্তু দিবেবাকের মৃত্যু হয় অল্প কিছুদিন পর। তখন তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র ও সেনাপতি ভীম রাজা হন এবং ডোমার থেকে স্থানান্তরিত করে নতুন রাজধানী করেন গোপালপুর। বহিঃ শত্রুর হাত থেকে রাজধানী কে সুরক্ষিত করার জন্য তিনি ৫মাইল লম্বা যে একটি মাটির গড় নির্মাণ করেন তার নাম ’’ভীমের গড়’’ । বদরগঞ্জ উপজেলায় যমুনেশ্বরী নদীর পূর্ব পাড় থেকে শুরু করে গোপালপুরের দক্ষিণ পাশ দিয়ে কিছুদুর এগিয়ে চৌদ্দভূবন বিলকে ছূঁয়ে গড়টি মিঠাপুকুর থানার ধাপ,ভক্তিপুর প্রভৃতি গ্রামের উপর দিয়ে প্রায় রংপুর-বগুড়া মহাসড়কের কাছে গিয়ে ঠেকেছে। গড়টি পূর্ব পশ্চিমে লম্বা এবং বর্তমানে জঙ্গলাকীর্ণ। কিছু কিছু স্থানে মানুষ ঘর-বাড়ি নির্মাণ করছে গড় কেটে।
শ্যামপুর রেল স্টেশনের ১মাইল দক্ষিণে গোপালপুর গ্রামটি আজ বদরগঞ্জ উপজেলাধীন একটি ইউনিয়ন । এই গ্রামে এলে এখনো প্রাচীনকালের বড় বড় বট-পাকুড় গাছ এবং মজে যাওয়া বিশালকৃতির পুকুর দেখা যায় । পুকুরের চতুর্দিকে বন জঙ্গলে আবৃত। পরবর্তীতে অবশ্য কুন্ডি পরগণার জমিদার বংশীয়দের এক শরিক এই গোপালপুরে কয়েক পুরুষ বসবাস করেছেন।
’’ কুন্ডির জমিদার বংশ’’ গ্রন্থে ভীমের গড় সম্পর্কে লেখা হয়েছে ,’’এই গড় কোচবিহার রাজ্যের সীমা নির্দেশ করে’’। কোচবিহার রাজ্যের গোড়াপত্তন করেন বিশ্বসিহ বহু বহু শতাব্দী পরে। তার সীমানা এই গড় হতে পারে। কিন্ত গড়টির নির্মাতা যে রাজা ভীম তা গড়ের নামই বলে দিচ্ছে - ’ ভীমের গড়’।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস